দিনের খেলায় খুলনাকে ২৮ রানে হারায় এনামুল হকের রাজশাহী। এরপর রাতের খেলায় স্বাগতিক সিলেট বিপিএল ২০২৫ আসরে, তাদের প্রথম জয় তুলে নেয় ঢাকার বিপক্ষে। এই নিয়ে ঢাকা টানা ৬ ম্যাচ হার দেখল।
আরিফুল হকের জয় নিশ্চিতের পর থিসারার সাথে করমর্দন ও জিশানের উইকেট নেবার পর উদযাপন
খুলনা বনাম রাজশাহী
শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) দিনের খেলায় সিলেট আন্তজার্তিক ক্রিকেট স্টোডিয়ামে খুলনা টসে জিতে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেয়। শুরুতে ব্যাট করতে এসে রাজশাহী ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৭৮ রান করে। ওপেনার জিসান আলম ও মোহাম্মাদ হারিস মিলে ৩৩ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে তুলে। জিসান ২৩(২২) ও হারিস ২৭(২০) করে ফিরে গেলে । তারপর অধিনায়ক বিজয় ৭,মেহেরব ৫ রান করে ফিরে গেলে চাপ আরও বেড়ে যায়। কিন্তু সেখান থেকে বার্ল ও ইয়াসির রাব্বির ৫১ বলে ৮৮ রানের বিশাল জুটিতে ১৬০+ রান করার সাহস পায়। শেষে ৩ চারে ও ১ ছক্কায় ৯ বলে ২১ রানের আকবর আলীর ক্যামিওতে ১৭৮ রান করে।
খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেয় নাসুম এবং ১ টি করে উইকেট শিকার করে নাওয়াজ,মিরাজ ও আবু হাইদার রনি।
১৭৯ রানের লক্ষ্য তারা করতে এসে খুলনা শুরুতেই ধাক্কা খায়। দলীয় ও নিজের ৬ রানে ফিরে যায় উইলিয়াম বোসিস্ত। ৩ নম্বরে ব্যাট করতে আসা অধিনায়ক মিরাজ ১ রানে ফিরেন তাসকিনের বলে ক্যাচ দিয়ে। এরপর একে একে নাইম ২৪,আফিফ ৩৩,অংকন ১৮ ও কায়েস ১৭ রান করে ফিরেন। শেষে নাসুম ছাড়া বাকি সবাই ২ অংকের ঘরেও পৌছাতে পারেনি। এরফলে ৩ বল বাকি থাক্তেই ১৫০ রানে গুটিয়ে যায় খুলনার ব্যাটাররা।
২ টি করে উইকেট তুলেছে তাস্কিন,সোহাগ গাজী ও রায়ার্ন বার্ল। বাকি ৪টি উইকেট ১টি করে শিকার করেন জিশান আলম,শফিউল,মেহেরব ও মৃত্যুঞ্জয়।
আরও পড়ুনঃ বিপিএল ২০২৫: দেখে নিন পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি
ঢাকা বনাম সিলেট
একই দিনে রাতের খেলায় মুখোমুখি হয় সিলেট ও ঢাকা। এই ম্যাচের আগে দুই দলই ছিল জয়শূন্য। কিন্তু ফলাফল আজ কারো না কারো পক্ষে আসারই ছিল। ঢাকা আজ টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেয়। ফর্মে ফিরতে মরিয়া লিটন দাসের ব্যাট থেকে আজ রান এসেছে। আগে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা ক্যাপিটালস তাদের ব্যাটিং শক্তিমত্তার প্রমাণ দেয়। ওপেনার লিটন দাস এবং মুনিম শাহারিয়ার দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। লিটন ৪৩ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৭৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। অপরপ্রান্তে মুনিম কিছুটা ধীরগতিতে শুরু করলেও ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫২ রান করেন। লিটন ও মুনিমের বিদায়ের পর দ্রুত ২ উইকেট হারায় ঢাকা।
এরপর সাব্বির রহমান ও অধিনায়ক থিসারা পেরেরা চতুর্থ উইকেটে মাত্র ১৭ বলে ৪১ রান যোগ করেন। সাব্বির ৩টি ছক্কায় সাজানো ১০ বলে ২৩ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। থিসারা ৯ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান করেন। সিলেটের হয়ে রাহকিম কর্নওয়াল ৩টি উইকেট নেন। ২০ ওভার শেষে ঢাকা সংগ্রহ করে ১৯৩ রান, যা প্রতিপক্ষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে হচ্ছিল।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেট প্রথম বলেই বিপদে পড়ে। মুস্তাফিজুর রহমান রাহকিম কর্নওয়ালকে ইনিংসের প্রথম বলেই আউট করেন। এরপর জর্জ মানসে (১১) এবং অ্যারন জোনস (১৪) দ্রুতই ফিরে যান। দলীয় ৪২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সিলেট। তবে একপ্রান্ত আগলে দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকেন জাকির হাসান।
জাকিরের ২৭ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে ছিল ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের নমুনা। তিনি ৪টি ছক্কা ও ৫টি চার মারেন। তার বিদায়ের পর রনি তালুকদার (২০ বলে ৩০), জাকের আলী (১৭ বলে ২৪), এবং আরিফুল হকের (১৫ বলে ২৮) কার্যকর ইনিংস দলের জয় নিশ্চিত করে। সিলেট ৮ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায়।
ঢাকার হয়ে ফারমানউল্লাহ শফি এবং রানজানে দুটি করে উইকেট নেন। মুস্তাফিজ, আবু জায়েদ, ও মোসাদ্দেক ১টি করে উইকেট শিকার করেন। তবে সিলেটের ব্যাটিং গভীরতা ও দ্রুত রান তোলার দক্ষতা ঢাকার বড় সংগ্রহকেও অতিক্রম করে।
রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে শেষ হাসি হাসে সিলেট, যা তাদের জয়ের ধারায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।