রংপুর রাইডার্সের সহজ ম্যাচে অপ্রত্যাশিত ফলাফল। গ্লোবাল সুপার লিগে বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করা একমাত্র দলটি হচ্ছে এই রংপুর রাইডার্স। বিদেশের মাটিতে রংপুর রাইডার্স শুরুটা ভাল করতে পারেনি। অবশ্য এই যায়গায় যোগ্যতাপূর্ণ দল ফরচুন বরিশাল তাদের নাম সরিয়ে নিয়েছে। যার ফলে রংপুর রাইডার্স তার পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছে।
১৩৩ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রংপুর রাইডার্স বেশ শক্ত অবস্থানে ছিল। ম্যাচের শেষ তিন ওভারে তাদের দরকার ছিল মাত্র ১৩ রান, হাতে ছিল ৫ উইকেট। তবে এমন সুবিধাজনক পরিস্থিতি থাকার পরও ম্যাচ নিজেদের পক্ষে আনতে ব্যর্থ হয়। শেষ বলে ২ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করতে সক্ষম হলেও, সুপার ওভারে গিয়ে রংপুর হেরে বসে।
সহজ ম্যাচে অপ্রত্যাশিত ফলাফল রংপুর রাইডার্সের | ছবি: সংগৃহীত
সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে রংপুর রাইডার্স মাত্র ১২ রান সংগ্রহ করে। এমন কম রানের লক্ষ্য নিয়ে হ্যাম্পশায়ারের ব্যাটাররা জবাব দিতে নামে। শুরুতেই লিয়াম ডসন একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ উত্তেজনার চূড়ায় নিয়ে যান। তবে পরের বলেই উইকেট হারালে রংপুর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। এরপর দুই সিঙ্গেল নেওয়ার পর শেষ দুই বলে ৫ রান প্রয়োজন ছিল হ্যাম্পশায়ারের। তবে পঞ্চম বলেই ডসন আবার ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতে নেন, রংপুরকে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দেন।
রংপুরের এমন হার ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। কারণ শেষ চার ওভারে তাদের দরকার ছিল মাত্র ১৭ রান, আর হাতে ছিল ৬ উইকেট। যে কেউই ধরে নিত এমন পরিস্থিতিতে সহজেই জয় তুলে নেবে তারা। তবে শেষ চার ওভারে একটিও বাউন্ডারি মারতে না পারা, দ্রুত উইকেট হারানো এবং কয়েকটি রান আউটের কারণে ম্যাচ নাটকীয়ভাবে রংপুরের হাতছাড়া হয়। শেষ ওভারে ক্রিজে থাকা রিশাদ হোসেন শুধু টাই করতে পেরেছিলেন, কিন্তু সুপার ওভারে তারাও ব্যর্থ হয়।
আরও পড়ুন :
»আইপিএল নিলাম ২০২৫ : মুস্তাফিজ-রিশাদ অবিক্রীত
»বিপিএল ২০২৫: দেখে নিন পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি
এর আগে প্রথম ইনিংসে রংপুর রাইডার্সের বোলাররা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখায়। তারা প্রতিপক্ষ হ্যাম্পশায়ারকে অল্প রানে আটকে দেয়। দলে সবাই মিলিতভাবে দুর্দান্ত বোলিং করে প্রতিপক্ষকে চাপের মধ্যে রেখেছিল। এরপর ব্যাট করতে নেমে সৌম্য সরকারের ২০ বলে ২৭ রান এবং সোহান ও খুশদিল শাহর ভালো শুরুর কারণে জয়ের পথেই ছিল তারা। তবে ইনিংসের শেষ দিকে কেউই ম্যাচ শেষ করার মতো ভূমিকা রাখতে পারেননি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলোকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টটি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। গতবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল খেলতে আগ্রহ না দেখানোয় রংপুর রাইডার্স এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পায়। তবে বিদেশের মাটিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তাদের এমন ব্যর্থতা অনেকটাই হতাশাজনক।
এই পরাজয়ের সবচেয়ে বড় কারণ ফিনিশিং দুর্বলতা। শেষ চার ওভারে হাতে ৬ উইকেট থাকার পরও তারা ম্যাচ জিততে ব্যর্থ হয়। দলের অভিজ্ঞ ব্যাটাররাও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন। শুধু ব্যাটিং নয়, ম্যাচের শেষ দিকে ফিল্ডিংয়ের সময় রান আউটের সুযোগগুলো হাতছাড়া করাও বড় কারণ।
রংপুর রাইডার্সের এই পরাজয় দলের জন্য একটি বড় শিক্ষা হতে পারে। তাদের ফিনিশিং এবং চাপের মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থতা হলেও টুর্নামেন্টের বাকি অংশে ভালো পারফর্ম করে রংপুর রাইডার্স ঘুরে দাঁড়াবে, এমনটাই আশা করছে তাদের ভক্তরা। এটি শুধু একটি ম্যাচ ছিল, কিন্তু তাতে ফুটে উঠেছে দলগত পারফরম্যান্সের অভাব এবং শেষ মুহূর্তে চাপ সামলানোর দুর্বলতা। রংপুর যদি পরবর্তী ম্যাচগুলোতে এগুলো কাটিয়ে উঠতে পারে, তবে তারা নিশ্চয়ই শক্তিশালীভাবে টুর্নামেন্টে ফিরে আসবে।