হার দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু করল টাইগাররা(বাংলাদেশ)। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে,বোলাররাও করে দেখাতে পারেনি বিশেষ কিছু। শুরুতেই মাত্র ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। রূদয় ও জাকেরের ব্যাটে কোনোরকম ২০০+ রান করে বাংলাদেশ। ২২৯ রানের সহজ লক্ষ্য তারা করতে এসে শুবমান গিলের সেঞ্চুরিতে ২১ বল ও ৬ উইকেটে হাতে রেখেই ম্যাচটি জিতে নিয়েছে ভারত।
ভারতকে চাপে ফেলেও শেষ পর্যন্ত হারই সঙ্গী বাংলাদেশের। ছবি- সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টাইগাররা। তবে ব্যাটিংয়ে নেমেই ধাক্কা খায় দল, ৪৯.৪ ওভারে সংগ্রহ করে ২২৮ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৬.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়েই সহজ জয় নিশ্চিত করে ভারত।
ভারতের জয়ের নায়ক ছিলেন শুবমান গিল। ১২৯ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তিনি। তার সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন লোকেশ রাহুল, যিনি করেন ৪১ রান। অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে আসে ৪১, আর বিরাট কোহলি করেন ২২ রান।
টাইগারদের হয়ে বোলিং আক্রমণ সামলানোর দায়িত্ব নেন রিশাদ হোসেন। ১০ ওভারে ৩৮ রান খরচ করে নেন ২টি উইকেট, তার শিকারের তালিকায় ছিলেন কোহলি ও অক্ষর প্যাটেল। এছাড়া তাসকিন আহমেদ ৯ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ১টি ও মুস্তাফিজুর রহমান ৯ ওভারে ৬২ রান খরচ করে ১টি উইকেট শিকার করেন।
ভারত শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তাসকিন। ছবি- আইসিসি
রান তাড়া করতে নেমে ভারতীয় ওপেনাররা দারুণ সূচনা করেন। রোহিত ও গিলের ব্যাটে উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬৯ রান। তবে পাওয়ার-প্লের শেষ ওভারে রোহিতকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। এরপর কোহলি নামলেও ভারতের রান তোলার গতি কিছুটা কমে যায়।
দলীয় ১১২ রানের মাথায় রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন কোহলি। শ্রেয়াস আইয়ারও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, মুস্তাফিজের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মিড অফে। তখন ভারতের স্কোর ১৩৩।
চাপ সামাল দিতে শুবমানের সঙ্গে যোগ দেন অক্ষর প্যাটেল। তবে তিনিও রিশাদের গুগলিতে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান। ১৪৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভারত কিছুটা চাপে পড়ে, কিন্তু সেই চাপ কাজে লাগাতে পারেনি টাইগাররা।
দলীয় ১৭২ রানের মাথায় সহজ ক্যাচ ফেলেন জাকের আলী, ব্যাটিংয়ে তখন লোকেশ রাহুল। সেই ভুলই ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দেয় টাইগারদের। শেষ পর্যন্ত শুবমান ও রাহুলের ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতেই ভারত জয় নিশ্চিত করে।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা, মাত্র ৩৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে দল। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে লড়াই করেন হৃদয় ও জাকের আলী। ২০৬ বলে ১৫৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন তারা। জাকের ৬৮ রান করে ফিরে গেলে তাওহীদ হৃদয় একাই লড়াই চালিয়ে যান এবং তুলে নেন নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক শতক।
ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে শতকের দেখা পেয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। ছবি- আইসিসি
শেষদিকে রিশাদ হোসেন ১২ বলে ১৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। ওপেনিংয়ে নামা তানজিদ তামিম করেন ২৫ রান, আর মিরাজ ৫ রানে আউট হন। তবে টপ অর্ডারের হতাশাজনক পারফরম্যান্সে সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম শূন্য রানেই ফিরেন। ভারতের হয়ে বল হাতে মোহাম্মদ শামি ৫টি, হর্ষিত রানা ৩টি ও অক্ষর প্যাটেল ২টি উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ: ২২৮/১০ (৪৯.৪ ওভার)
পাকিস্তান: ২৩১/৪ (৪৬.৩ ওভার)
ফলাফল: ভারত ৬ উইকেটে জয়ী