সাকিব আল হাসানের নাম ইতিহাসে প্রথম ‘টাইমড আউট’ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে, সাকিব চিটাগং কিংসের হয়ে এই ম্যাচটি খেলতে পারেননি। যদি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি) থেকে অনাপত্তিপত্র পেতেন, তবে প্রথম ‘টাইমড আউট’ ভুক্তভোগী হতেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, যিনি চিটাগংয়ের সঙ্গী হতে পারতেন। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ‘টাইমড আউট’ ঘটনা ঘটে যেত তাঁদের বিপক্ষে।
শামীম হোসেনের ৭৮ রান বৃথা গেছে । ছবি: চিটাগং কিংস
তবে তা হয়নি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ‘মহানুভবতা’ প্রদর্শন করে খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ এমন ঘটনা হতে দেননি। ব্যাটিংয়ে নামতে দেরি করায় চিটাগংয়ের টম ও’কনেলকে আউট দেন আম্পায়ার। ও’কনেলের বিরুদ্ধে আবেদন প্রথম করেছিলেন মিরাজ, এবং অনেক বিতর্কের পর শেষ পর্যন্ত নিজের মত পরিবর্তন করে ও’কনেলকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন। তবে, তার পরেই ও’কনেল প্রথম বলেই আউট হন, সেটাও মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে!
এই নাটকীয় ঘটনা ঘটে যখন চিটাগংয়ের স্কোর ছিল ৫৬ রান, ৬ উইকেট হাতে। কিছুক্ষণ পর স্কোর ৭৫/৮ হয়ে যায়, মনে হচ্ছিল চিটাগং ১০০ রানও করতে পারবে না। কিন্তু শামীম হোসেনের একার লড়াইয়ে চিটাগং কিছুটা মান রক্ষা করে। ১১ বছর পর বিপিএলে ফেরা চিটাগং প্রথম ম্যাচেই ৩৭ রানে হেরে যায়।
খুলনা টাইগার্স ২০৩ রান সংগ্রহ করে ৪ উইকেট হারিয়ে, যার মধ্যে বোসিস্টো ৭৫* ও মাহিদুল ৫৯* রান করেন। জবাবে, শামীমের ৭৮ রানের ঝলকিত ইনিংস সত্ত্বেও, চিটাগং ১৬৬ রানে অলআউট হয়ে যায়।
মিরাজের ‘মহানুভবতা’ ছাড়াও ম্যাচটি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে অনেক কিছুই মনে রাখবে। ১ বলেই ১৫ রান, ক্যাচ মিস, ২০০ রান পার করা প্রথম দল হিসেবে খুলনা, বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম ফিফটি, এবং শামীমের একক লড়াই—এগুলো ছিল বিশেষ মুহূর্ত।
খুলনা প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ারপ্লেতে নাঈমের উইকেট হারায়, তারপর বোসিস্টো ও মিরাজের সান্নিধ্যে ৫১ রানের জুটি গড়ে দলের স্কোর এগিয়ে নেয়। মিরাজ আউট হলে, ইব্রাহিম জাদরান ও আফিফ হোসেনও খুব বেশি সময় টিকতে পারেননি। তবে, বোসিস্টো ও মাহিদুলের অবিচ্ছিন্ন ৮৬ রানের জুটিতে খুলনার সর্বোচ্চ ২০০ রান পেরিয়ে যায়। বোসিস্টো ৭৫ রান এবং মাহিদুল ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। মাহিদুল ১৮ বলে ৫০ রান পূর্ণ করে, যা বিপিএল এবং বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম ফিফটি।
২০০ রানের লক্ষ্য চিটাগংয়ের জন্য কঠিন ছিল। সাকিব, ম্যাথুস ও মঈন আলীর অনুপস্থিতি এবং বোলিং শক্তির ঘাটতি তাদের জন্য এটি আরও কঠিন করে তোলে। চিটাগংয়ের ছয়জন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানের মধ্যে পাঁচজনই ব্যর্থ হন।
ফলে, খুলনা টাইগার্স ২০ ওভারে ২০৩/৪ রান করে, এবং চিটাগং ১৮.৫ ওভারে ১৬৬ রান সংগ্রহ করে, খুলনা জয়ী হয় ৩৭ রানে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহিদুল ইসলাম