বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ইতিহাসে গোলদাতাদের ভূমিকা সবসময়ই বিশেষ। কারা দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন, কার গোল অনুপাত সবচেয়ে ভালো, কোন প্রজন্মে সবচেয়ে বেশি ফিনিশার উঠে এসেছে—এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আগ্রহ থাকে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে। এই প্রতিবেদনে থাকছে বাংলাদেশের শীর্ষ দশ গোলদাতাদের পূর্ণ তালিকা, গোল সংখ্যা, ম্যাচ, গোল অনুপাত এবং তাদের পারফরম্যান্সের বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ইতিহাসে অনেক তারকা ফুটবলার রয়েছেন, যারা নিজেদের পারফরম্যান্স দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন সমর্থকদের হৃদয়ে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত পরিসংখ্যান হলো গোল সংখ্যা ও গোল অনুপাত। গোলদাতাদের এই তালিকা দেশের ফুটবলের সামগ্রিক মান, ধারাবাহিকতা এবং প্রজন্মভিত্তিক খেলোয়াড়দের দক্ষতা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয়।
বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা গোলদাতা চুন্নু। জাতীয় দলের হয়ে ৫০ ম্যাচে করেছেন ১৭ গোল। তাঁর গোল অনুপাত ০.৩৪, যা বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য। ৮০’র দশকের ফুটবলে তিনি ছিলেন দেশের আক্রমণভাগের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নাম।
জাহিদ হাসান আমেলি দীর্ঘ সময় জাতীয় দলে খেলেছেন এবং করেছেন ১৫ গোল। যদিও তাঁর গোল অনুপাত তুলনামূলক কম (০.২৩), তবে বহু বছর দলে নিয়মিত খেলার প্রমাণ হিসেবে এই সংখ্যা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
শেখ মোহাম্মদ আসলাম ও কাজী সালাহউদ্দিন—বাংলাদেশ ফুটবলের দুই কিংবদন্তি নাম।
আসলামের গোল অনুপাত ০.২৭
সালাহউদ্দিনের ০.৩১
সালাহউদ্দিন কম ম্যাচ খেলেও ভালো গোল অনুপাত ধরে রেখেছেন, যা তাকে তালিকায় আরও প্রভাবশালী করে।
তালিকায় গোল অনুপাতে সবচেয়ে এগিয়ে এনামুল হক এবং শাখাওয়াত হোসাইন রনি।
এনামুল ১৬ ম্যাচে ৭ গোল করে অনুপাত তুলেছেন ০.৪৪,
রনি ২০ ম্যাচে ৮ গোল করে অনুপাত ০.৪০।
এদের পারফরম্যান্স দেখায়—যদি তারা আরও বেশি ম্যাচ খেলতেন, তবে হয়তো শীর্ষস্থান দখল করতেও পারতেন।
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত তরুণ ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন মাত্র ২১ ম্যাচে ৭ গোল করে অনুপাত রেখেছেন ০.৩৩। মাঠে তার গতি, বুদ্ধিমত্তা ও ফিনিশিং দক্ষতা দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন—আগামী বছরগুলোতে তিনি এই তালিকায় আরও ওপরে উঠে যাবেন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সর্বকালের সেরা গোলদাতাদের তালিকায় সেরা ১০ এ ঢুকে পড়েছে মোরসালিন। শীর্ষ দশে ম্যাচ প্রতি গোল রেশিও এর হিসেবে এই মুহুর্তে তার সামনে কেবল এনামুল হক ও আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু। স্কোরিং এ আমাদের ঐতিহাসিক সমস্যা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। আশা করি, মোরসালিন ভালো কোন বিদেশি লীগে গিয়ে নিজেকে আরও শাণিত করবে। কিউবা মিশেল সহ সামনে ভালো প্রতি্যোগিতা আসতে যাচ্ছে তার জন্য।
গোলদাতারা শুধু ম্যাচ জেতানোর নায়কই নন, বরং তারা দেশের ফুটবলের প্রতীক। তাদের পারফরম্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে এবং জাতীয় দলে প্রতিযোগিতার মান বাড়িয়ে দেয়। গোল সংখ্যা, অনুপাত, ধারাবাহিকতা ও ম্যাচের গুরুত্ব—সব মিলিয়ে এ তালিকাটি বাংলাদেশের ফুটবলের ঐতিহাসিক শক্তির প্রতিচ্ছবি।
| র্যাঙ্ক | খেলোয়াড় | গোল | ম্যাচ (Caps) | গোল অনুপাত (Goals per Match) |
| ১ | আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু | ১৭ | ৫০ | ০.৩৪ |
| ২ | জাহিদ হাসান আমেলি | ১৫ | ৬৪ | ০.২৩ |
| ৩ | শেখ মোহাম্মদ আসলাম | ১৪ | ৫১ | ০.২৭ |
| ৪ | আলফাজ আহমেদ | ১২ | ৬২ | ০.১৯ |
| ৫ | kazi salahuddin | ৯ | ২৯ | ০.৩১ |
| ৬ | শাখাওয়াত হোসাইন রনি | ৮ | ২০ | ০.৪০ |
| ৬ (সমতা) | খন্দকার ওয়াসিম ইকবাল | ৮ | ৪৭ | ০.১৭ |
| ৮ | এনামুল হক | ৭ | ১৬ | ০.৪৪ |
| ৮ (সমতা) | শেখ মোরসালিন | ৭ | ২১ | ০.৩৩ |
| ৮ (সমতা) | মামুন জোয়ার্দার | ৭ | ৩৩ | ০.২১ |