ফুটবল বিশ্বে রিয়াল মাদ্রিদ এমন একটি নাম, যাকে চাপে ফেলার চেষ্টা প্রায়শই প্রতিপক্ষের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা দুই ম্যাচ হারের ধাক্কা সামলে ইতালির আতালান্তার বিপক্ষে যে লড়াই করল রিয়াল, তা ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়। বের্গামোর গিউইস স্টেডিয়ামে ৩-২ গোলের জয়ে রিয়াল শুধু ম্যাচ জিতেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং আরও একবার দেখিয়েছে তাদের ‘কামব্যাক’ করার অদম্য ক্ষমতা।
এমবাপ্পে ছন্দে ফেরার দিনে,,ইঞ্জুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে | ছবি: এক্স
রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলত্তি হয়তো এমন নিখুঁত পারফরম্যান্সের প্রত্যাশা করেননি, তবে দলের আক্রমণভাগের তিন ত্রিফলা—কিলিয়ান এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এবং জুড বেলিংহাম—যেভাবে জ্বলে উঠেছেন, তা দেখার মতো। প্রথম গোলটি আসে ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটে, যখন ব্রাহিম দিয়াজের পাস থেকে এমবাপ্পে গোল করেন। এটি ছিল তাঁর ৫০তম চ্যাম্পিয়নস লিগ গোল। মোনাকো, পিএসজি এবং রিয়ালের হয়ে এমন মাইলফলকে পৌঁছানো মাত্র নবম ফুটবলার তিনি।
এমবাপ্পের গোলের পর রিয়াল শুরুর দিকে এগিয়ে থাকলেও তাঁর চোট দলের জন্য ধাক্কা হয়ে আসে। ৩৬ মিনিটে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এরপর আতালান্তা ম্যাচে ফেরে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। রিয়ালের ডিফেন্ডার চুয়ামেনির ফাউলের ফলে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরান ডি কেটেলায়ের।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের দৃশ্যপট পুরো বদলে দেন ভিনিসিয়ুস। পেশির চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরা এই ব্রাজিলিয়ান তারকা ৫৬ মিনিটে রিয়ালকে এগিয়ে দেন। এরপর ৫৯ মিনিটে তাঁর পাস থেকেই গোল করেন জুড বেলিংহাম। এই গোল বেলিংহামের জন্য ছিল বিশেষ, কারণ তিনি ১২ ম্যাচের গোলখরা কাটিয়ে উঠলেন।
৬৫ মিনিটে আতালান্তার লুকমান গোল করে ব্যবধান কমান। এরপর যোগ করা সময়ে মাতেও রেতেগির একটি শট গোলবারের ওপর দিয়ে চলে গেলে রিয়াল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। আর এই নাটকীয় ম্যাচ জয়ের মাধ্যমে পয়েন্ট তালিকায় ছয় ধাপ এগিয়ে যায় রিয়াল।
আতালান্তা হয়তো সাম্প্রতিক ফর্মে ফেবারিট ছিল, কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদ অন্য গ্রহের দল। প্রতিপক্ষের মাঠে, প্রতিকূল পরিবেশে এমন জয়ে আনচেলত্তির শিষ্যরা শুধু পয়েন্টই অর্জন করেনি, ফুটবলবিশ্বকে আবার মনে করিয়ে দিয়েছে—রিয়ালকে কখনোই গোনার বাইরে রাখা যায় না।