অবশেষে বহু প্রতীক্ষার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আজ রবিবার(১২ই জানুয়ারি) ঘোষণা করলো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ বাংলাদেশ স্কোয়াড। আজই ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাংলাদেশ স্কোয়াড ঘোষনা করার শেষ দিনে। এই স্কোয়াডে রয়েছে দুই চমক। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাংলাদেশের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন লিটন দাস ও শরিফুল ইসলাম।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ | ছবিঃ সংগ্রহীত
সব কিছুকে পেছনে ফেলে লিটন দাসের বাদ পড়াটা সবচেয়ে বড় চমক ছিল। তবে এটা হবারই ছিল,খোদ লিটন দাসেই বোধয় জানতেন। গেল ১ বছরে লিটন দাসের ব্যাট হাসেনি তেমন। সম্ভাবনাময় ও ক্লাসি এই ব্যাটার মোটে ১টি মাত্র ফিফটির দেখা পেয়েছে সাদা বলের ক্রিকেটে। তবে সেই ফিফটি নিয়েও আছে প্রশ্ন ও সমালোচনা। সেইদিন ইনিংসের আদ্যন্ত ব্যাট করেও আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ,ম্যাচটা হেরে সেমিফাইনালের আশাও হয়েছে পন্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ হবে ওয়ানডে ফরম্যাটে। সেই ফরম্যাটে লিটন দাসের সট্যাট আরও বিবর্ণ। ৫ ইনিংসে ব্যাট করে,মোটে করেছেন ৬ রান। বিপিএল ২০২৫ আসরে ঢালিউড মেগাস্টার খ্যাত শাকিব খানের দল ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে খেলছেন লিটন। সেখানেও তার খারাপ ফর্ম অব্যাহত রয়েছে। তবে সবশেষ ম্যাচে যদিও ৭৩ রানের বড় ইনিংস খেলে দলকে বড় লক্ষ্য সেট করতে সাহায্য করে। কিন্তু শেষ ৩ ম্যাচে ডাবল ফিগারেই পৌছাতে পারননি লিটন।
এমন ভয়াবহ ফর্মের কারনেই আস্থা হারিয়েছেন লিটনের প্রতি নির্বাচকরা। তার যায়গায় সুযোগ মিলেছে বাংলাদেশের প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা দলের সদস্য,জাতীয় দলে অনভিষিক্ত পারভেজ হোসেন ঈমনের। তিনি ৭টি টি-২০ ম্যাচ খেলে ফেললেও,তার এখনও ওয়ানডে ফরম্যাটে অভিষেক হয়নি। তার পরেও লিটনের যায়গায় যোগ্য মনে করেছেন নির্বাচকরা তাকেই।
অপরদিকে শরিফুল ইসলামও বাদ পড়েছেন বাজে ফর্মের জন্য। শেষ একবছরে সাদা বলে তার গড় ৪০ রানেরও বেশি। সামপ্রতিক সময়ে বাংলাদেশ পেস ইউনিটের জাগরণে ছিলেন তিনিও,তবে মাঝে কোথায় জানি হারিয়ে গেছে তার ফর্ম। নিজেকে খুঁজে ফিরছেন এই পেসার। তার যায়গায় দলে ডুকেছেন গতির ঝড় নাহিদ রানা। তাছাড়া তানজিম সাকিবের সাথে স্থান লড়াইয়ে,শেষমেশ শেষ হাসি হেসেছেন সাকিবই।
বোলিং টেস্টে দুবার ফেল করায় নিষিদ্ধ হয়েছে সাকিব | ছবিঃ সংগ্রহীত
দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল খান গত কয়েকদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম ফেসবুকে তার এক পোস্টে স্পষ্টভাবেই তার অবসরের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। যার কারনে তাকে স্কোয়াডে রাখার সুযোগ নেই। তামিমের সঙ্গি হচ্ছেন তার আরেক সতীর্থ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। যিনি কিনা ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে শাষন করেছেন,আইসিসির অলরাউন্ডারের ১নম্বর অবস্থান। তা আবার ৩ ফর্মেটেই।
সাকিব এ নিয়ে পরপর ২বার বোলিং একশন ভুল অভিযোগে পরীক্ষা দিয়েও পাশ করতে পারেনি। তা ছাড়া তার ব্যাটিংয়েরও বেশখানিকটা ধার কমেছে। সেই যের টেনেই হয়তো,বিসিবি তাকে উপযোগ্য মনে করেনি।
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দল ও ফ্রাঞ্চাইজির হয়ে ফর্মে থাকা সৌম্য তার স্থান দলে পাকাপোক্তভাবেই করে নিয়েছে। তার ওপেনিং জুটি হিসেবে থাকছেন গেল ওয়ানডে সিরিজে (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ভাল খেলা তানজিদ হাসান তামিম।
আরও পড়ুনঃ বিপিএল ২০২৫: দেখে নিন পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি
ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া আইসিসির শেষ ওয়ানডে ফর্মেটের টুর্নামেন্টে,ব্যাকআপ ওপেনার না রাখায় দলে,বাংলাদেশ বেশ ভুগেছে। তাই সেই চিন্তা করে এইবার ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে পারভেজ হোসেন ঈমনকে।
চারে অধিনায়ক শান্ত,পাঁচে তাওহীদ হৃদয়,ছয়ে মুশফিকুর রহিম,সাতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ,আটে জাকের আলী ও নয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ।
সাকিব না থাকাতে নাসুম ১০ নম্বরে সুযোগ পেয়েছেন নিশ্চিতভাবেই। তাছাড়া ওয়ানডেতে নিজেকে খুঁজে ফেরা রিশাদ হোসেন এক্স-ফেক্টর হিসেবে ১১ নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে দলে রেখেছে বোর্ড। বাকি চারজনের যায়গায় থাকছেন পেসাররা।
সেখানে পেস বোলারদের নেতা হিসেবে থাকছেন তাসকিন আহমেদ,তারপর একে একে মুস্তাফিজুর রহমান ও গতির ঝড় তুলতে নাহিদ রানা। এবং শেষে তানজিম হাসান সাকিব।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের সম্ভাব্য দলঃ
টপ-অর্ডারঃ সৌম্য সরকার,তানজিদ হাসান তামিম,পারভেজ হোসেন ঈমন,নাজমুল হোসেন শান্ত(অধিনায়ক),তাওহীদ রূদয়,মুশফিকুর রহিম।
মিডেল অর্ডারঃ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ,মেহেদী হাসান মিরাজ,জাকের আলী অনিক,রিশাদ হোসেন।
লোয়ার-অর্ডারঃ নাসুম আহমেদ,তাসকিন আহমেদ,মুস্তাফিজুর রহমান,তানজিম সাকিব,নাহিদ রানা।