বিপিএল ২০২৫ ড্রাফট ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, এবং প্রতিটি দল তাদের স্কোয়াড গঠন করেছে। এখন সবার মনে প্রশ্ন: কোন দল সবচেয়ে শক্তিশালী? এই প্রতিবেদনে দলগুলোর শক্তি, দুর্বলতা, এবং তাদের সামগ্রিক সামর্থ্য বিচার করে একটি পাওয়ার র্যাঙ্কিং তৈরি করা হয়েছে। এটি নির্ধারণ করতে খেলোয়াড়দের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, স্কোয়াডের ভারসাম্য এবং দলের অভিজ্ঞতার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ফরচুন বরিশাল আবারো একটি শক্তিশালী দল গঠন করেছে। দলটি ড্রাফট থেকে রিশাদ হোসেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা তাদের বোলিং বিভাগকে আরও শক্তিশালী করবে। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে পাথুম নিশাঙ্কা এবং জেমস ফুলারের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছে। দেশি তারকাদের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ এবং ইবাদত হোসেন দলকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। বরিশালের দলটি ব্যাটিং এবং বোলিং উভয় ক্ষেত্রেই ভারসাম্যপূর্ণ। তাদের পেস এবং স্পিন বোলিংয়ে শক্তি, এবং বড় স্কোর করার জন্য তাদের ব্যাটিংয়ে প্রচুর গভীরতা রয়েছে।
এছাড়া, তাদের দলের মধ্যে সঠিক সমন্বয়, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার মিশ্রণ তাকে শিরোপার জন্য অন্যতম দাবিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফরচুন বরিশাল যদি তাদের স্কোয়াডের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পারে, তাহলে তারা বিপিএল ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন হতে পারে।
বিপিএল ২০২৫ । ছবিঃ বিডিস্পোর্টসনাও
ঢাকা ক্যাপিটালস একটি অভিজ্ঞ এবং তারকাখচিত দল গঠন করেছে। লিটন দাসের মতো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান এবং সাব্বির রহমানের মতো অলরাউন্ডার তাদের শক্তি বৃদ্ধি করবে। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সাইম আইয়ুব এবং আমির হামজা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। দলের শক্তি হলো তাদের ব্যাটিং গভীরতা এবং অভিজ্ঞ বোলিং ইউনিট।
ঢাকার শক্তি তাদের ব্যাটিং লাইন-আপে দেখা যায়, যেখানে লিটন দাস, সাইম আইয়ুব, এবং সাব্বির রহমানের মতো ব্যাটসম্যানরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। তবে, দলের বোলিং বিভাগে কিছু ক্ষেত্রে উন্নতির প্রয়োজন, যেখানে তাদের স্পিন বোলিং বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে যদি দলের বিদেশি স্পিনাররা নিজেদের সেরাটা দিতে পারেন, তবে ঢাকার জন্য এটি একটি শক্তিশালী আক্রমণ হতে পারে।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের স্কোয়াড তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ। রাহকিম কর্নওয়ালের মতো পাওয়ার হিটার এবং সামিউল্লাহ শেনওয়ারির মতো কার্যকর অলরাউন্ডার তাদের বড় সম্পদ। দেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে রনি তালুকদার এবং মাশরাফি বিন মুর্তজার অভিজ্ঞতা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে বোলিং বিভাগে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে।
এছাড়া, সিলেট স্ট্রাইকার্সের পেস বোলিং বিভাগও কিছুটা দুর্বল, তবে তাদের ব্যাটিং শক্তি এবং প্রতিভাবান অলরাউন্ডারদের মাধ্যমে বিপিএল ২০২৫-এ ভালো ফলাফল আশা করা যেতে পারে। এই দলটি তাদের স্কোয়াডের সমন্বয় এবং শক্তি নিয়ে চমক দেখাতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুনঃ আইপিএল নিলাম ২০২৫ : মুস্তাফিজ-রিশাদ অবিক্রীত
খুলনা টাইগার্সের দলটি বেশ প্রতিশ্রুতিশীল। পেসার হাসান মাহমুদ এবং মোহাম্মদ নাঈমের মতো তরুণ প্রতিভা রয়েছে। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে মোহাম্মদ হাসনাইন এবং লুইস গ্রেগরির মতো নাম রয়েছে। তবে তাদের ব্যাটিং গভীরতা নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন রয়ে গেছে।
এছাড়া, খুলনা টাইগার্সের স্কোয়াডে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অলরাউন্ডারের অভাব রয়েছে, যা তাদের খেলার গতি এবং কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের পেস বোলিং বিভাগের শক্তি হলেও, ম্যাচ জিততে হলে তাদের ব্যাটিং ইউনিটের শক্তিশালী পারফরম্যান্স প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম কিংস দলটি স্থানীয় খেলোয়াড়দের উপর নির্ভর করেছে। শামীম হোসেন এবং মোহাম্মদ মিঠুনের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান দলে রয়েছেন। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে গ্রাহাম ক্লার্ক এবং থমাস ও’কনেল উল্লেখযোগ্য। তবে দলের স্পিন এবং পেস অ্যাটাক তুলনামূলক দুর্বল।
চট্টগ্রাম কিংসের দলে কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছেন, তবে তাদের স্কোয়াডে গভীরতা কম এবং বোলিং ইউনিট কিছুটা দুর্বল। তাদের এই দুর্বলতাগুলি যদি তারা শীঘ্রই কাটিয়ে উঠতে না পারে, তাহলে বিপিএল ২০২৫-এ তাদের জন্য কঠিন সময় আসতে পারে।
রাজশাহী একটি প্রতিশ্রুতিশীল স্কোয়াড গঠন করেছে, যেখানে তাসকিন আহমেদ এবং আকবর আলীর মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সাদ নাসিম এবং লাহিরু সামারাকুন দলে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যাটিং গভীরতার অভাব এবং অগভীর বোলিং ইউনিট তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।
রাজশাহী একটি প্রতিভাবান দল গঠন করেছে, তবে তাদের এক্সপেরিয়েন্সে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। ব্যাটিংয়ের জন্য তারা বেসিক কৌশলে চলে গেলে, তাদের জন্য আরও সমস্যা হতে পারে। তবে, তরুণ খেলোয়াড়রা যদি তাদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে পারে, রাজশাহী ভালো ফলাফল আশা করতে পারে।
রংপুর রাইডার্স দলটি কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে দলে নিয়েছে, যেমন সৌম্য সরকার এবং সাইফ হাসান। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে আকিফ জাভেদ এবং কার্টিস ক্যাম্ফার উল্লেখযোগ্য। তবে তাদের স্কোয়াডে ভারসাম্যের অভাব এবং অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে।
রংপুর রাইডার্সকে এবার বিপিএলে কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে, কারণ তাদের স্কোয়াডে অভিজ্ঞতার অভাব এবং ব্যাটিংয়ের গভীরতা কম। তবে, তরুণ খেলোয়াড়দের মধ্যে যদি কেউ অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখাতে পারে, তাদের র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন আসতে পারে।
এই পাওয়ার র্যাঙ্কিং মূলত প্রাক-টুর্নামেন্ট মূল্যায়ন। মাঠের পারফরম্যান্স, ইনজুরি এবং দলের সমন্বয় ভবিষ্যতের র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন আনতে পারে।