২০১৫ সালের পর থেকে প্রায় ১০ বছর ধরে বার্সেলোনার ট্রফি ক্যাবিনেটে চ্যাম্পিয়নস লিগের ট্রফি আসছেনা। রাফিনিয়া,ইয়ামালরা ট্রেবল জেতার স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বার্সাকে। তবে সব আশায় পানি ঢেলে দিয়ে,ইন্টার মিলান চলে গেল চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ গোলের জয় তুলে নিয়েছে বার্সেলোনা।
৯৮ মিনিটে চূড়ান্ত গোল দিয়ে বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়ে ইন্টার মিলান খেলোয়াড়েরা | ছবি: গেটি ইমেজ
গতকাল ঘরের মাঠ সান সিরোতে সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে মিলান। এর আগে সেমির প্রথম লেগে ৩-৩ গোলে ম্যাচ সমতা হয়েছিল উভয় দলের। দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ গোল পরাজিত হয় বার্সেলোনা।
সান সিরো যেন ইন্টার মিলানের জন্য এক অজেয় ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ৯৭২ দিন ধরে তারা এই মাঠে অপরাজিত, যেখানে ১৫ ম্যাচের মধ্যে ১২টিতে জয় আর বাকি তিনটি ড্র। এই দুর্দান্ত রেকর্ড নিয়েই বার্সেলোনার মুখোমুখি হয় লাওতারো মার্তিনেজ, ইয়ান সোমার ও ডেনজেল ডামফ্রিসরা—যা শুরু থেকেই কাতালানদের জন্য ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ইন্টার দারুণ ছন্দে থাকা দুই খেলোয়াড়, লাওতারো ও হাকান চালহানোğluর গোলে ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। কিন্তু পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে এরিক গার্সিয়া ও দানি ওলমোর পরপর দুই গোলে সমতায় ফিরে আসে তারা। এরপর ম্যাচের ৮৮ মিনিটে রাফিনিয়ার এক অসাধারণ গোলে ৩–২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বার্সা, তখন মনে হচ্ছিল তারা বুঝি এক অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে চলেছে।
তবে নাটক তখনও শেষ হয়নি। ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে ডেনজেল ডামফ্রিসের এক নিখুঁত ক্রস থেকে হেডে গোল করে বার্সাকে স্তব্ধ করে দেন সেন্টারব্যাক ফ্রান্সেসকো আচেরবি। ৩–৩ গোলে সমতায় ফিরেই আবার উত্তাল হয়ে ওঠে সান সিরোর গ্যালারি।
দুই লেগ মিলিয়ে ৬–৬ সমতায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এই চাপের মুহূর্তে আবার সামনে আসেন ডেভিডে ফ্রাত্তেসি। ইরানি স্ট্রাইকার মেহদী তারেমির কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করে ইন্টারকে এগিয়ে দেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যবধান ধরে রেখে জয় নিশ্চিত করে ফাইনালে ওঠে সিমোন ইনজাগির দল।
মজার বিষয় হলো, এই ফ্রাত্তেসির কাছ থেকেই কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে এক মহামূল্যবান গোল এসেছিল বায়ার্ন মিউনিখের মাঠে। সেই গোলেই হারিয়েছিল ইন্টার জার্মান জায়ান্টদের। এখন আবার তার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ গোলেই ইন্টার ফিরছে সেই আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায়, তবে এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের জন্য। নেরাজ্জুরিদের এই যাত্রায় ফ্রাত্তেসি হয়ে উঠেছেন তাদের নির্ভরতার প্রতীক।