১৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য,শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রংপুর। এরকম বেহাল দশা কাটিয়ে উঠে মাঝে ইফতেখার ও খুশদিলের চার-ছক্কার ফুল ঝুড়িতে। তার পরও শেষ ওভারে ২৬ রান প্রয়োজন ছিল। মনে হচ্ছিল রংপুর তাদের প্রথম হারের মুখ দেখবে। কিন্তু, অধিনায়ক নুরুল হাসান তা মানতে পারেনি। তিনি শেষ ওভারে কাইল মায়ার্সকে পেয়ে, ৩০ রান নিয়ে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করেন। বিপিএল ২০২৫ এর অন্যতম শক্তিশালী দল ফরচুন বরিশালকে এই নিয়ে টানা দু’বার হারাল রংপুর।
৩ চার ও ৩ ছক্কায় শেষ ওভারে ৩০ রান নিয়েছেন সোহান। ছবি- সংগৃহীত
সোহানের ম্যাচ ভাগ্যের সাথে সাথে টস ভাগ্য ও অব্যাহত থাকছে। এই নিয়ে ম্যাচের সাথে টসেরও ৬ এ ৬ হল। আজ বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারী) সিলেট আন্তজার্তিক ক্রিকেট স্টোডিয়ামে টসে জিতে নুরুল হাসান সোহান ব্যাটিংয়ে পাঠায় বরিশালকে। বরিশালের শুরুটাও ভাল হয়েছিল। পাওয়ার প্লেতে বরিশাল কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৬ রান তুলে। তামিম ও শান্ত মিলে ৮০+ রানের বড় জুটি গড়ে তোলে। সোহানের কামরুল ইসলাম রাব্বিকে বোলিংয়ে নিয়ে আসা,বেশ ভাল্ভাবেই কাজে দেয়। রাব্বি তার শুরুর ওভারেই ক্রিজে সেট হওয়া দুই ওপেনার তামিম ৪০(৩৪) ও শান্তকে ৪১(৩০) ফিরিয়ে দেন।
এরপর তাওহিদ রূদয় ও কাইল মায়ারস মিলে ৫৯ রানের জুটি গড়েন। আকিফ জাবেদের বলে তাওহিদ ১৮ বলে ২৩ করে ফিরে গেলে। এর পরের ওভারেই ফিরে যান মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু সেখান থেকে ফাহিম আশরাফ ও কাইল মায়ারস মিলে বোর্ডে ১৯৭ রানের বড় সংগ্রহ দাড় করে বরিশাল।
আরও পড়ুনঃ শান্তর বিদায়: বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে কার নেতৃত্বে এগোবে
রংপুরের হয়ে ৩ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। এছাড়া আকিফ জাভেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
রংপুরের শুরটা মোটেই ভাল হয়নি । দলীয় ৪ রানেই ৩ বল খেলে মাত্র ১ করে ফিরে যান অ্যালেক্স হেলস। রংপুর পাওয়ার প্লেতে মাত্র ৩৪ রান তুলে ১ উইকেট হারিয়ে।এরপর ছোট ছোট জুটি গড়ে এগোতে থাকে তারা। এতে দলীয় ৬৬ রানেই ৩ উইকেট হারায় তারা। সাইফ হাসান ২২ ও তৌফিক খান ৩৮ রান করে ফিরে যান।
দলের জয় নিশ্চিতের পর উদযাপন করছেন সোহান। ছবি- রংপুর রাইডার্স
এরপর ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেন ইফতেখার আহমেদ ও খুশদিল শাহ। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৫৩ বলে ৯১ রান যোগ করেন তারা। তবে ইফতেখার উইকেটকিপার শান্তকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে, ৩৬ বলে ৪৮ রান করে ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। কিছুক্ষণ পরে ফিরে খুশদিল শাহও। এই পাক অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৪৮ রান। তবে খুশদিল ফিরে গেলে বড় বিপাকে পড়ে রংপুর। একে একে তার দেখানো পথে হাঁটেন শেখ মেহেদি ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তবে অপরপ্রান্তে ২ বলে ১ রান করে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক সোহান।
শেষ ওভারে স্ট্রাইক পান সোহান। তার সামনে সুযোগ ছিল ম্যাচের নায়ক হয়ে উঠার। তিনি সেই চ্যালেঞ্জটাই নিলেন। তখন দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। বোলিংয়ে আসেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স। এরপরেই অবিশ্বাস্য এক ব্যাটিং করেন সোহান। তিন চার ও দুই ছক্কার মারে প্রথম ৫ বলেই ২৪ রান তুলে নেন তিনি। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২ রান। তবে তিনি বল উড়িয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। আর বনে যান ম্যাচ জয়ের নায়ক ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ১৯৭/৫ (২০ ওভার)
রংপুর রাইডার্স: ২০২/৭ (২০ ওভার)
ফলাফল: রংপুর রাইডার্স ৩ উইকেটে জয়ী