রিয়াল মাদ্রিদের ঘরের মাঠে হারালো ম্যান সিটি
Ad Banner

রিয়াল মাদ্রিদের ঘরের মাঠে হারালো ম্যান সিটি

  • প্রকাশিত হয়েছে: বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১৮ বার এই মুহূর্তে
রিয়াল মাদ্রিদ,ম্যান সিটি,ম্যানচেস্টার সিটি,ম্যানচেষ্টার সিটি
জাবি আলানসোর হয়তো যাবার সময় হয়ে গিয়েছে!। গেটি ইমেজ
                       

রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যান সিটির মধ্যকার ম্যাচটি শুরু থেকেই ছিল উচ্চ তীব্রতায় ভরা। বার্নাবেউয়ের গ্যালারি যেন প্রত্যাশায় টইটম্বুর। ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই উভয় দলই নিজেদের স্বাভাবিক আক্রমণাত্মক ফুটবল তুলে ধরে। সিটি বল দখলে আধিপত্য দেখালেও রিয়াল মাদ্রিদ পাল্টা আক্রমণে ছিল অধিকতর সরাসরি ও দ্রুত।

প্রথম দিকেই দেখা যায় দুই দলের মাঝমাঠে চাপ–প্রতিচাপ। রডরি ও ডে ব্রুইনে সিটির পাসিং গতি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন, অপরদিকে কামাভিঙ্গা ও বেলিংহাম চেষ্টা করছিলেন দ্রুত বল এগিয়ে দিতে। তবে ম্যাচের প্রথম গোলটি আসে রিয়াল মাদ্রিদের প্রচেষ্টার ফল হিসেবে। ২৮ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের নিচু পাস ধরে বক্সের ডানদিকে বল পেয়ে যান রদ্রিগো। চমৎকার টাচে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু শটে গোল করেন তিনি। গোলের মুহূর্তে রিয়ালের আক্রমণের গতি ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দৃঢ়তা পরিষ্কারভাবে ধরা পড়ে।

গোল খাওয়ার পর ম্যানচেস্টার সিটি তাদের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে। বল দখলের পরিমাণ বাড়ায় তারা, উইং দিয়ে আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করে। ৩৭ মিনিটে কর্নার থেকে আসে তাদের সমতাসূচক গোল। গার্দিওলের শক্তিশালী হেড প্রথমে লুনিন ঠেকালেও রিবাউন্ডের বল দ্রুত বুঝে নিয়ে জালে পাঠান ও’ রাইলি। এই গোলটি রিয়ালের ডিফেন্সিভ ম্যাচ–রিডিংয়ের দুর্বলতা তুলে ধরে—বিশেষ করে দ্বিতীয় বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থতা।


আরও পড়ুন:

নেইমার সান্তোসকে বাঁচিয়ে,বিশ্ব‌কাপ হুমকির মুখে


প্রথমার্ধের শেষ দিকে আসে ম্যাচের সবচেয়ে বিতর্কিত মুহূর্ত। বক্সে ঢোকার সময় হালান্দের সঙ্গে রুডিগারের হালকা সংস্পর্শকে VAR ফাউল হিসেবে ব্যাখ্যা করে। রেফারি মাঠে এসে ভিডিও পর্যালোচনার পর পেনাল্টি দেন সিটিকে। স্পটকিক থেকে হালান্দ অনায়াসে গোল করে সিটিকে বিরতিতে ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। রিয়াল মাদ্রিদ খেলোয়াড়রা সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকলেও রেফারির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি।

বিরতির পর রিয়াল মাদ্রিদ খেলায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই তারা আক্রমণাত্মক তালে খেলতে চেষ্টা করে। ভিনিসিয়ুস দু–একটি ব্যক্তিগত দৌড়ে হুমকি তৈরি করেন, বেলিংহাম দূরপাল্লার শটে গোলের চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ তৃতীয়াংশে তাদের সমন্বয় স্পষ্টভাবে দুর্বল ছিল। সিটির ডিফেন্স লাইনে ডিয়াস ও আকানজির দৃঢ় অবস্থান, সাথে মিডফিল্ডে রডরির বল কাটিং—এই সবকিছু মিলেই রিয়ালের আক্রমণ বারবার ভেঙে যায়।

ম্যানচেস্টার সিটি আক্রমণে খুব ঝুঁকি নেয়নি, কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে ছিল অত্যন্ত পরিণত। তারা টেম্পো ধীর করে ম্যাচের গতির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখে। মাঝেমধ্যে কাউন্টার–থ্রেট সৃষ্টি করলেও গোল করার ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহ দেখায়নি। তারা স্পষ্টভাবেই বুঝিয়ে দেয়—লিড রক্ষাই তাদের কৌশল।

ম্যাচের শেষ দিকে রিয়াল মাদ্রিদ আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। কারভাহাল ও মেন্ডি উইং থেকে ক্রস বাড়ালেও বক্সে সঠিক সময়ে কেউ পৌঁছাতে না পারায় বড় কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি। বদলি হিসেবে নামা ব্রাহিম দিয়াজও গতি আনতে চেষ্টা করেন, তবে সিটির সংগঠিত রক্ষণভাগ তাকে খুব বেশি জায়গা দেয়নি। ম্যাচের শেষ কয়েক মিনিটে কর্নার ও ফ্রি–কিক পেয়েও রিয়াল সমতা ফেরাতে পারেনি।

দ্বিতীয়ার্ধে রিয়ালের প্রাধান্য থাকলেও সিটি ছিল শৃঙ্খলাবদ্ধ। প্রতিটি আক্রমণ ঠাণ্ডা মাথায় সামলে তারা অভিজ্ঞতার পরিচয় দেয়। রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর পর ২–১ ব্যবধানেই জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে ম্যানচেস্টার সিটি।

পুরো ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ আক্রমণে বেশি চেষ্টা করেছে, কিন্তু সিটিই ছিল ম্যাচ ম্যানেজমেন্টে শ্রেষ্ঠ। সুযোগ কাজে লাগানো, পজিশন ধরে রাখা এবং রক্ষণে স্থিরতা—এই তিন দিকেই তারা এগিয়ে ছিল। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলতে গেলে প্রথমার্ধের পেনাল্টিই শেষ পর্যন্ত দুই দলের ব্যবধান গড়ে দেয়।

, , , , , , , , , , ,

Share Your Thoughts

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

আরও পড়ুন এই ক্যাটেগরিতে