২০২৫ বিপিএলে রংপুর রাইডার্স শুরু করেছে দুর্দান্তভাবে। নুরুল হাসান সোহানের অধিনায়কত্বে প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে দলটি। আজ (মঙ্গলবার) তারা চতুর্থ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৩৪ রানে পরাজিত করেছে। রংপুরের হয়ে বল হাতে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তরুণ গতিতারকা নাহিদ রানা, যিনি বিপিএলে তার ক্যারিয়ারসেরা ৪ উইকেট শিকার করেছেন।
নাহিদ রানার গতির কাছে ৪ উইকেট তুলে দিল সিলেট । ছবিঃ সংগ্রহীত
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে রংপুর ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রানের মোটামুটি সংগ্রহ করে। সিলেট যখন লক্ষ্য তাড়া করতে নামে, তারা ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১২১ রানে থেমে যায়।
এদিন সিলেট স্ট্রাইকার্সের ইনিংসের শুরুটা যেন দুঃস্বপ্নের মতো। রান তাড়ায় নামার পরই প্রথম ওভারে ওপেনার জর্জ মুনশি ফিরে গেলে সিলেট ব্যাটিং অর্ডারে ধসের ইঙ্গিত মেলে। তবে রনি তালুকদার ও জাকির হাসান দ্রুত হাল ধরার চেষ্টা করেন। তাদের ঠান্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিতে থাকে সিলেট।
কিন্তু ইনিংসের পঞ্চম ওভারে নাটকের শুরু। নাহিদ রানার দারুণ গতির বোলিংয়ে সিলেট বড় আঘাত পায়। তিনি পরপর দুই বলে জাকির হাসান (১৮) ও আইরিশ বিধ্বংসী ব্যাটার পল স্টার্লিংকে (৬) ফেরান। এই জোড়া আঘাত সিলেটকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। এরপর ক্রিজে নামেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু তার ধীর গতির ব্যাটিংয়ে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে যায়। একের পর এক ডট বল খেলে তিনি চাপ বাড়িয়ে দেন।
রনি তালুকদার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। চতুর্থ উইকেটে জাকেরের সঙ্গে মিলে ৫৬ বলে ৪৮ রান যোগ করেন তিনি। কিন্তু ১৫তম ওভারে খুশদিল শাহ যেন জাদু দেখান। এক ওভারে তিনি সিলেট শিবিরে জোড়া আঘাত করেন, বিদায় করেন রনি তালুকদারকে (৩৬ বলে ৪১) ও অধিনায়ক আরিফুল হককে (০)। রনির বিদায়ের সঙ্গে সিলেটের লড়াই কার্যত শেষ হয়ে যায়।
পরের ওভারে নাহিদ রানা আবারো জ্বলে ওঠেন। প্রথম বলেই জাকের আলী তাকে ছক্কা মারেন। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই জাকেরের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। তিনি নাহিদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তার ধীরগতির ৩৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস সিলেটের সম্ভাবনা আরও কমিয়ে দেয়।
শেষদিকে সিলেটের ব্যাটিং লাইনআপ সম্পূর্ণ ধসে পড়ে। কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২১ রানেই থেমে যায় তাদের ইনিংস। রংপুরের হয়ে নাহিদ রানা দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন তিনি। সঙ্গী হিসেবে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও খুশদিল শাহ নেন ২টি করে উইকেট।
রংপুর রাইডার্স: ১৫৫/৬ (২০ ওভার)
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১২১/৯ (২০ ওভার)
ফলাফল: রংপুর রাইডার্স ৩৪ রানে জয়ী।
নাহিদ রানার বিধ্বংসী স্পেল, খুশদিল শাহের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং এবং রনি তালুকদারের শান্ত ব্যাটিং এই জয়ের মূল ভিত্তি তৈরি করেছে। রংপুরের এই জয়ে দলটি যেন টুর্নামেন্টে নিজেদের আধিপত্যের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।