কাগজ-কলমে এবারের বিপিএলে সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি দল হল ফরচুন বরিশাল এবং রংপুর রাইডার্স। এই দুইয়ের প্রথম দেখায় বড় দলের মত উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের হয়নি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজকের দ্বিতীয় ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বরিশালকে, ৮ উইকেটে হারিয়ে একপেশে জয় তুলে নিয়েছে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন দল রংপুর রাইডার্স।
বড় ব্যবধানেই জিতেছে রংপুর রাইডার্স । ছবিঃ প্রথম আলো
তীব্র শীতের সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ম্যাচের শেষ দিকে কুয়াশা পুরো মাঠকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। মিরপুরের প্রেসবক্স থেকে মাঠের মাঝ উইকেট ঝাপসা দেখাচ্ছিল। তবে এই কুয়াশাও রংপুরের জয়ের পথে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তারা ম্যাচ জিতে নেয় আরও ৩০ বল বাকি থাকতেই।
১৫ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মনে হয়েছিল রংপুরও হয়তো চাপে পড়তে পারে। কিন্তু ওপেনার অ্যালেক্স হেলস এবং চারে নামা সাইফ হাসান দারুণ ব্যাটিং করে খেলা শেষ করে দেন। তৃতীয় উইকেটে গড়ে তোলেন ১১৩ রানের অপরাজিত জুটি। ফাহিম আশরাফের বলে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন হেলস। তিনি ৪১ বলে করেন ৪৯ রান। অন্যদিকে সাইফ হাসান ছিলেন আরও কার্যকর। তিনি ৪৬ বলে অপরাজিত ৬২ রানের ইনিংস খেলেন।
বরিশালের জন্য ম্যাচটি শুধু হার নয়, আরও খারাপ খবর হয়ে আসতে পারত মুশফিকুর রহিমের চোট। উইকেটকিপিং করতে গিয়ে বাঁ হাতে চোট পান মুশফিক। তবে ম্যাচ শেষে বরিশাল কোচ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এটি গুরুতর কিছু নয়।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশাল দল ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিল। কামরুল ইসলামের করা প্রথম ওভারেই অধিনায়ক তামিম ইকবাল চার এবং ছক্কায় ১০ রান তুলে নেন। কিন্তু এই ঝড় থেমে যায় দ্রুতই। তামিম ১৮ বলে ২৮ রান করে আউট হওয়ার আগেই নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তাওহিদ হৃদয় সাজঘরে ফিরে যান। তামিম আউট হওয়ার পর বরিশালের ইনিংস একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদের শেষ ৯টি উইকেট পড়ে যায় মাত্র ৮২ রানের ব্যবধানে।
এটি ধরে নেওয়ার কোনো কারণ নেই যে মিরপুরের উইকেট হঠাৎ করেই বোলিং–বান্ধব হয়ে গেছে। বরং বরিশালের ব্যাটসম্যানরা বাজে শট খেলে নিজেদের জন্য কাজ কঠিন করে তোলেন। রংপুরের বোলাররা অবশ্য এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেন। খুশদিল শাহ মাত্র ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন। ইফতেখার আহমেদ এবং নাহিদ রানা যথাক্রমে ১০ এবং ৩২ রানে ২টি করে উইকেট তুলে নেন।
এভাবে একপেশে জয় তুলে নিয়ে রংপুর রাইডার্স প্রমাণ করেছে কেন তাদের শক্তিশালী দল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে বরিশালের জন্য এটি ছিল শুরুর থেকেই ভুলে যাওয়ার মতো একটি ম্যাচ।
ফরচুন বরিশাল: ১৮.২ ওভারে ১২৪ (তামিম ২৮, নবী ২১, মুশফিক ১৫, মায়ার্স ১৩; খুশদিল ৩/১৮, ইফতেখার ২/১০, রানা ২/৩২)।
রংপুর রাইডার্স: ১৫ ওভারে ১২৮/২ (সাইফ ৬২*, হেলস ৪৯*; ইমন ২/৪১)।
ফল: রংপুর রাইডার্স ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাইফ হাসান।