
বিশাল রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। পাঁচ নম্বরে নেমে তাওহিদ হৃদয় দাঁড়িয়ে থাকলেও অন্য প্রান্তে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলেও দলকে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমাতেই সাহায্য করতে পেরেছেন তিনি।
চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ হেরে যায় ৩৯ রানে। টস জিতে আগে ব্যাট করে আয়ারল্যান্ড তোলে ৪ উইকেটে ১৮১। জবাবে মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। তবে হৃদয়ের অপরাজিত ৮৩ রানে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৪২ পর্যন্ত যেতে পারে স্বাগতিকরা।
পাঁচে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৫০ বলে ৮৩ রান করেন হৃদয়, যেখানে ছিল ৫টি বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কা। জাকের আলি করেন ২০ রান, আর দশ নম্বরে নেমে শরিফুল ইসলাম করেন ১২ রান—যা দলের তৃতীয় সর্বোচ্চ। ৭৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ধসে পড়ার পর শেষ দিকে দলের হাল ধরেন হৃদয়। নবম উইকেটে শরিফুলকে সঙ্গে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়েন, যা বাংলাদেশের এই অবস্থানে সর্বোচ্চ জুটি।
বাংলাদেশের টপ অর্ডার পুরোপুরি ব্যর্থ—তানজিদ ২, পারভেজ ১, লিটন ১ ও সাইফ ৬ রান করে আউট হন। চার ব্যাটার মিলে মোটে ১০ রান—টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে টপ–অর্ডারের সর্বনিম্ন সংগ্রহ এটি। এতদিন এই অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডটি ছিল ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে করা ১২ রানের।
পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২০ রান ওঠে—যা টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। একই বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ৬ ওভারে ১৬ রান তুলেছিল দল। আইরিশদের হয়ে বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিজ মাত্র ১৩ রানে নেন ৪ উইকেট। ব্যারি ম্যাকার্থি নেন ৩ উইকেট এবং মার্ক অ্যাডায়ার নেন ২টি।
আরও পড়ুনঃ
২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: দেখুন পুরো সময়সূচি ও ভেন্যু
ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনলালে পর্তুগাল
টস হেরে ব্যাটিং শুরু করে দুর্দান্ত সূচনা পায় আয়ারল্যান্ড। ওপেনার পল স্টারলিং ও টিম টেক্টর প্রথম তিন ওভারে তুলে ফেলেন ৩৩ রান। শরিফুলের এক ওভারেই টিম মেরে দেন ১৮ রান। তবে পাঁচ নম্বর ওভারে বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই স্টারলিংকে আউট করেন তানজিম হাসান সাকিব। পাওয়ার প্লে শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৮/১। নবম ওভারে আক্রমণ করলে রিশাদ হোসেন থামান আগ্রাসী টিম টেক্টরকে। লং–অনে চমৎকার ক্যাচ নেন তানজিদ—৩১ রান করে ফেরেন টিম।
সেখান থেকে কিছুটা গতি কমলেও লরকান টাকারকে নিয়ে আবার আক্রমণে যান হ্যারি টেক্টর। পানি বিরতির পর দুই ওভারে তুলে ফেলেন ২৭ রান। তবে টাকার বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি; শরিফুলের ধীরগতির বলে ক্যাচ দেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফার মাত্র ২৯ বলে ৪৪ রান যোগ করেন। ১৮তম ওভারে সাকিবের বলে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ক্যাম্ফারকে (২৪) বিদায় করেন পারভেজ ইমন। শেষ দিকে ব্যাটিং ঝড় তোলেন হ্যারি টেক্টর। ৩৭ বলে পঞ্চাশ করার পর আরও আগ্রাসী হয়ে শেষ ওভারে দু’টি ছক্কা হাঁকান। ৮ বলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নেন অতিরিক্ত ১৯ রান।
বাংলাদেশের হয়ে সাকিব ৪ ওভারে ৪১ রানে নেন ২ উইকেট। শরিফুল ও রিশাদ পান ১টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৮১/৪
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪২/৩