ঐতিহাসিক ইংল্যান্ডের ফুটবল স্টোডিয়াম ওয়েম্বেলিতে রিয়াল মাদ্রিদ ১৫ বারের মতো শিরোপা জয় লাভ করে চ্যাম্পিয়নস লিগের। ব্রুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে এই কীর্তি গড়ে মাদ্রিদ। ইউরোপে একটা কথার প্রচলন আছে যে,মাদ্রিদ ফাইনাল হারেনা। সেই কথার পূর্ণ সম্মান দেখিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব।
ডর্টমুন্ড প্রায় নিজেদের কাজটা করেই ফেলেছিল। রিয়াল মাদ্রিদকে ওয়েম্বলিতে আটকে রেখেছিল ৭৩ মিনিট পর্যন্ত। প্রথমার্ধে বেশ কিছু ভাল সুযোগও তৈরি করেছিল তারা। তবে সব ভঙ্গুর হয় ম্যাচের ৭৪ মিনিটে। তাদের দ্বিতীয় শিরোপার সপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেল,জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের নেওয়া কর্নার কিক থেকে, কার্ভাহালের গোলে। ২০২১/২২ মৌসুমে রিয়াল জিতেছিল এই শিরোপা। মাঝে গত বছর ২২-২৩ মৌসুমে এই শ্রেষ্ঠত্ব কেড়ে নিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। হারানো রাজত্ব ফিরে পেল আনচেলত্তির দল।
আরও পড়ুনঃ আইপিএল ২০২৪ : মোস্তাফিজুর রহমানের আইপিএলে উইকেটের অর্ধশত
রিয়াল মাদ্রিদকে শুধু শুধু ইতিহাস মাদ্রিদ বলা হয়না। সেই ১৯৮১ সাল থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে হারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। ১৯৮৩ সালে পর আর কোনো ইউরোপিয়ান ফাইনালে হারেনি এই স্প্যানিশ পরাশক্তি। ২০২৪ সালে এসেও সেই রেকর্ড ধরে রেখেছে লস ব্লাঙ্কোসরা।
মাদ্রিদের বিপক্ষে যদি আপনি সুযোগ হাতছাড়া করেন,মানে কাজে লাগাতে না পারেন,তাহলে আপনার জন্য বিপদ অপেক্ষা করবে। প্রথমার্ধে বেশ ভাল ভাল সুযোগ পেয়েছিল ডর্টমুন্ড। কারিম আদেয়েমি তো একবার ১ বনাম ১ পরিস্থিতি চলে গেছিল মাদ্রিদ গোলরক্ষক কোর্তোয়ার বিপক্ষে। তবে সেখানে আদেয়েমি করতে পারেনি ফিনিশ। এরপর ডর্টমুন্ড ফরোয়ার্ড নিকোলাস ফুলক্রুগ এর একটি শট গিয়ে আঘাত হানে গোলবারের কাঠে। রিয়ালও সুযোগ করতে করতে শেষ পর্যন্ত ৭৪ মিনিটে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান কার্ভাহাল। টনি ক্রুসের মাপা ক্রস ছয় গজ বক্সের মধ্যে লাফিয়ে উঠে হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন দানি কার্ভাহাল (১-০)।
৭৮ মিনিটে আবারও রিয়ালের সামনে এসেছিল সুযোগ। কিন্তু ভিনিসিয়ুসের কাটব্যাক বেলিংহ্যাম টাচ করলেও কাজে লাগাতে পারেননি। তার ঠিক দুই মিনিট পর বিপজ্জনক জায়গা থেকে ক্রুসের ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান বরুশিয়ার গোলরক্ষক কোবেল।
১-০ তে পিছিয়ে পরে,ডর্টমুন্ডের ডিফেন্সার আর নার্ভ ধরে রাখতে পারেনি। ৮৩ মিনিটে আরেক গোল হজম করে ডর্টমুন্ড। ডিফেন্ডার ইয়ান ম্যাটসন লেফট ব্যাক পজিশন থেকে ভুল পাসে বল দিয়ে বসেন বেলিংহ্যামকে। ইংলিশ এই তারকা এক ঝলকে সেই বল পাঠিয়ে দেন বাঁদিকে থাকা ভিনিসিয়ুসকে। দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দিতে ভুল করেননি ভিনি (২-০)।
এরপর সুযোগ এসেছিল ডর্টমুন্ডের কাছেও। মাদ্রিদের ২-০ তে এগিয়ে যাওয়ার চার মিনিট পর বক্সের মধ্যে দারুণ হেডে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন বরুশিয়ার ফরোয়ার্ড ফুলক্রুগ। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়েই শিরোপা নিয়ে ঘরে ফিরলো লস ব্লাঙ্কোসরা। শেষ ১০ বছরে ৫ বারই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতলো রিয়াল।